রসুনের উপকারিতা ! রসুন এই নামটির সঙ্গে আমার সকলেই পরিচিত আমরা আমাদের প্রাত্যহিক রান্নায় রসুন ব্যবহার করে থাকি। এটি রান্না ছাড়াও ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়াও রসুন বিভিন্ন আচার ও মুখরোচক খাবার তৈরিতে রসুন ব্যবহার হয়
আজ আমরা এখানে রসুনের বিভিন্ন উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব।
রান্নার মশলা ও ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।রসুন হল পিঁয়াজ জাতীয় একটি ঝাঁঝালো সবজি।
এটির প্রধান সক্রিয় উপাদান অ্যালিসিন নামক সালফারযুক্ত জৈব যৌগ। অ্যালিসিন রসুনের কুখ্যাত গন্ধ ও বিখ্যাত ভেষজ গুণ দুইয়ের-ই প্রধাণ কারণ। অক্ষত রসুনে অ্যালিসিন থাকে না, থাকে অ্যালিইন – একটি অ্যামিনো অ্যাসিড যা প্রোটিন তৈরীতে অংশ গ্রহণ করে না (যা নিজে আরেক অ্যামিনো অ্যাসিড সিস্টিন থেকে তৈরি হয়) ।
রসুনকে কাটলে বা ক্ষত করলে অ্যালিনেজ নামে একটি উৎসেচক অ্যালিইন থেকে অ্যালিসিন তৈরি করে। অ্যালিসিন খুবই স্বল্পস্থায়ী। রান্না করলে বা অ্যাসিডের প্রভাবে অ্যালিনেজও নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তাই ভেষজ গুণের জন্য কাঁচা রসুন বেশি উপকারী।
বছরের পর বছর ধরে রসুন নিয়ে বিভিন্ন কাহিনী ছড়িয়ে আছে এটা আমাদের অজানা নয়।
রসুনের উপকারিতা ও ব্যবহারঃ
প্রধানত মসলা হিসেবে রসুন ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া বিভিন্ন আচার ও মুখরোচক খাবার তৈরিতে রসুনের ব্যবহার রয়েছে। রসুন যেমন আমাদের রসনাতৃপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, তেমনি রসুন দিয়ে নাকি ভ্যাম্পায়ার তাড়ানো হয়।
বছরের পর বছর ধরে রসুন নিয়ে বিভিন্ন কাহিনী ছড়িয়ে আছে এটা আমাদের অজানা নয়।
১) ইউরোপে ‘হোয়াইট ম্যাজিক’-এর নাকি মূল মাধ্যমই হচ্ছে রসুন। এমনকী, এই রসুন দিয়ে ইউরোপিয়ানরা ভ্যাম্পায়ারদের মোকাবিলা করেন। রসুনের মালা বা রসুন ঘরের সামনে ঝুলিয়ে রাখলে ভ্যাম্পায়াররা আসতে পারে না বলে বিশ্বাস।
২) ইসলাম মতে রসুন খেয়ে মসজিদে যাওয়া মানা। কারণ, রসুনের গন্ধে আল্লার নাম করতে গিয়ে মন অন্যদিকে চলে যেতে পারে।
হিন্দুরাও এই একই কারণে ভগবানের পুজো-অর্চনার সময়ে বা মন্দিরে যেতে গেলে রসুনকে এড়িয়ে চলেন। কারণ, রসুনের গন্ধে মনের পবিত্রতা নষ্ট হয় বলে বহু হিন্দু মনে করেন।
৩) কর্পূরের সঙ্গে পোড়া রসুন মেশালে মশা, মাছি, পোকামাকড়ের হাত রেহাই পাওয়া যায়। রসুনকে পিষে জলের সঙ্গে মিশিয়ে ঘর মুছলেও পোকা-মাকড়ের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
৪) রসুনে ১৭ মাত্রার অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। এই অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরের ভিতরের অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলোকে কাজ করতে সাহায্য করে। কারণ, মানুষের শরীরে ৭৫ শতাংশে থাকে এই অ্যামিনো অ্যাসিড।
৫) চাইনিজ খাবারে রসুন বেশি ব্যবহার হওয়ার কারণ সেখানে বিশ্বের ৬৬% রঁসুন উৎপাদন হয়।
৬) প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জখম সৈনিকদের গ্যাংগ্রিনের চিকিৎসাতে সালফারের ভাণ্ডার কম পড়লে রসুন ব্যবহার করা হত।
৭) রসুন হার্টের পক্ষে খুবই ভাল। কারণ, কাঁচা রসুন খেলে কোলেস্টোরল কমে। সর্দি-কাশিতেও রসুনের পথ্য মারাত্মক রকমের কার্যকারি।
৮) হাত থেকে রসুনের গন্ধ দূর করতে, ঠান্ডা জলের মধ্যে স্টিলের বাসনে হাত ঘসুন। গন্ধ দূর হবে।
৯) ১৯ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে ‘গার্লিক ডে’ পালিত হয়।
১০) বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবারেও রসুন ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘লাসুন কি ক্ষীর’।
রসুনের উপকারিতা-ভেষজ ব্যবহার ঃ
রসুন বিশ্বে বাণিজ্যিক ভেষজ হিসাবে সফলতম। ভেষজ রসুনজাত ওষুধ বিক্রয় হয়।
রসুন নিম্নলিখিত উপকার করে বলে মনে করা হয়ঃ
1. রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করে ।
2. রক্তচাপ কম করে।
3. করনারি (হার্ট) ধমনী রোগে উপকারী ।
পুষ্টি মূল্যঃ
রসুনে আমিষ, প্রচুর ক্যালসিয়াম ও সামান্য ভিটামিন ‘সি’ থাকে।
ভেষজ গুণ
১) কৃমি নাশক
২) শ্বাস কষ্ট কমায়
৩) হজমে সহায়তা করে
৪) প্রস্রাবের বেগ বাড়ায়
৫) শ্বাসনালীর মিউকাস বের করে দেয়
৬) এ্যাজমা রোগীর উপশম দেয়
৭) হাইপারটেনশন কমায়
৮) চুল পাকানো কমায়
৯) শরীরে কোলেস্টেরল লেভেল কমায়।
১০) হাড়ের বিভিন্ন রোগ সারায়।
****তাই মনে রাখবেন ভেষজ গুণের জন্য কাঁচা রসুন বেশি উপকারী।
Pingback:Diabetes diet chart in bengali language - Health Katha